হোঁচটের পর হোঁচট খাচ্ছে ড. কামালের মালিকানাধীন নির্বাচন কেন্দ্রীক ভাড়াটিয়া ও অবাঞ্ছিত নেতাদের বৃদ্ধাশ্রমখ্যাত জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। সিদ্ধান্তহীনতা, অর্থ সরবরাহে ডোনারদের অপরাগতা, অবিশ্বাস ও নেতৃত্বহীনতা নিয়ে ড. কামালের সাথে দূরত্ব বাড়ছে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের। আত্মপ্রকাশ থেকে শুরু করে সর্বশেষ ২২শে সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর নাট্যমঞ্চে অনুষ্ঠিতব্য যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নাগরিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে ড. কামাল ও বি. চৌধুরী ও মাহী বি. চৌধুরীর মধ্যে মত পার্থক্য দেখা দিয়েছে। যার ফলে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নামে সংঘবদ্ধ অবাঞ্ছিত নেতাদের যাত্রাপালা নির্বাচন পর্যন্ত চলবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সূত্র বলছে, ২২শে সেপ্টেম্বরের নাগরিক সমাবেশকে সফল করতে ২১ সেপ্টেম্বর বি. চৌধুরীর বাড়িতে এক গোপন বৈঠকে মিলিত হন ড. কামাল হোসেন ও বি. চৌধুরীরা। সোয়া এক ঘন্টার বৈঠকে নাগরিক সমাবেশকে সফল করা এবং সমাবেশ থেকে সরকারকে মেসেজ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। ড. কামাল হোসেন নাগরিক সমাবেশ থেকে সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার বিষয়টিও অত্যন্ত কনফিডেন্সের সাথে আলোচনা করেন। বৈঠকে উপস্থিত সূত্রে জানা যায়, ড. কামালের ভাষ্য হলো, যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কার্যক্রম দেখে সরকার বাধ্য হবে তাদের সাথে আলোচনায় বসতে এবং ছাড় দিতে। তিনি প্রয়োজনে রাজপথে আন্দোলন করে সরকারকে তাদের সাথে আলোচনায় বসতে বাধ্য করাবেন বলেও সাহসিকতা দেখান। কিন্তু আলোচনায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় খরচাপাতি নিয়ে। এতবড় সমাবেশ করতে গেলে প্রচুর টাকার প্রয়োজন। এছাড়া ভাড়া করা কর্মীদের প্রত্যেককে জনপ্রতি ১ হাজার টাকা দেওয়ার বিষয়টিও আলোচনা করেন ড. কামাল। এসময় সিনিয়র ও জুনিয়র বি. চৌধুরীর মুখ কালো হয়ে আসে। তারা বিএনপি ও জামায়াতের ডোনারদের সাথে কথা বলতে ড. কামালকে পরামর্শ দেন। তাদের পক্ষে এতগুলো টাকা খরচ করা সম্ভব নয় বলেও সাফ জানিয়েদেন ড. কামালকে। এসময় ড. কামাল নিজের আইন ব্যবসায় মন্দাভাব দেখিয়ে খরচের ব্যাপারে নিজের অপরাগতার বিষয়ে বার্তা দেন। ড. কামালের বক্তব্য ছিল, বিএনপি-জামায়াতের ডোনারদের কাছ থেকে টাকা নিলে তাদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকতে হবে। তাদের আদশে লেজ নড়াতে হবে। তাদের কথামত চলতে হবে, যা তার পক্ষে করা সম্ভব নয়। এসময় মাহী বি. চৌধুরী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে পয়সার ব্যবস্থা না করে এত বড় আয়োজন করার জন্য তিরষ্কার করেন। মাহী বলেন, আপনার কোমরে জোর নেই, তাহলে কার ভরসায় আপনি সমাবেশের চিন্তা করছেন? সারাজীবন ইনকাম করেও অভাবী আচরণ দূর করতে পারলেন না। গরীব গরীব বলে আর কত ফ্রির মাখন খাবেন? মাহী বি. চৌধুরীর অপমানসূচক কথবার্তায় চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ড. কামাল। মাহীকে বেয়াদব ও কুলাঙ্গার বলেও গালি দেন ড. কামাল। তিনি বলেন, চিন্তা করেছিলাম বিকল্প ধারাকে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে ৫০টি আসন দিব। কিন্তু তোর মত বেয়াদবের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে তোর ভাঙ্গাচোরা দলকে ৫টি আসন দিলেও লস হবে। এসময় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তাদের দুজনকে শান্ত হতে বলে তিনি বিএনপির ডোনারখ্যাত ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টুকে নক করার পরামর্শ দেন। আলোচনার এক পর্যায়ে রাগান্বিত হয়ে ড. কামাল বের হয়ে চলে যান।
নাগরিক সমাবেশের আয়োজন নিয়ে ড. কামাল ও বি. চৌধুরীদের অমিল বিষয়ে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, যে রাজনৈতিক জোট শুরুতেই হোঁচট খায় তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। সরকার পতনের আন্দোলন করবেন অথচ পয়সা খরচ করবেন না তা হয় না। অন্যের আশায় সংসার বাধা যায় না। বি. চৌধুরী ও ড. কামাল নখর দন্তহীন বাঘ। কথার ফুলঝুড়িতে অন্তত আন্দোলন হবে না। রাজনীতিতে পয়সা খরচ করতে হয়। অন্যের ভরসায় আন্দোলন-সংগ্রাম করা সম্ভব না। পয়সা খরচের বিষয়টি আসতেই তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেছে। হাড়ের ভাগ নিয়ে যেমন কুকুরদের ঝগড়া বাধে। বিষয়টি হাস্যকর। শেষ বয়সে এসেও অর্থের লোভ দূর হয়নি বয়োজ্যেষ্ঠ দুই নেতার।
0 coment rios: