উত্তর পশ্চিমের তীব্র হিমেল হাওয়ায় রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ শীতে বিপর্যস্ত। গত এক সপ্তাহ থেকেই রাজশাহীর উপর দিয়ে চলছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস আজ রবিবার সকালে এই মৌসুমের সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। শনিবার আগের দিন ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রের্কড করা হয়। শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা চার দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে ছিল। তাপমাত্রা ১০.৬ থেকে ৯.২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বাড়ছে। টানা গত কয়েকদিন থেকে বেলা বারোটা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে চারিদিক। দুপুরের দিকে দু’তিন ঘন্টার জন্য সূর্যের মুখ দেখা গেলেও তা ছিল তাপ হিন। সন্ধ্যার পর পরই আবারও নামছে কুয়াশা। রাত আটটার মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে চারিদিক। রাত যত গভীর হয় কুয়াশা তত গভীর হয়।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম জানান, উওর পশ্চিমের হিমেল বাতাসের কারণে এই তাপমাত্রা গায়ে লাগছে না । শীতের এ তীব্রতা আরো কয়েকদিন থাকবে। তাপমাত্রা আরো নিচে নামবে পারে।
আজ রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
এই হিমেল হাওয়ার দাপটেই কাঁপছে রাজশাহী অঞ্চলের ছিন্নমূল মানুষ। শ্রমজীবী মানুষ শীতের মধ্যেই কাজের সন্ধানে বের হলেও চাকরীজিবীরাও কিছুটা বিলম্বে অফিসে যাচ্ছে। বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুলছে দেরীতে।
রাজশাহী শহরের রিকশাচালক কালাম বলেন, শীতের কারনে লোকজন শহরে কম আসছে। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া লোকজন সহজে বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না এ জন্য রিকশায় নেওয়ার যাত্রীও কমে গেছে। আয় কমে যাওয়ায় কোনোমতে দিন কাটাতে হচ্ছে। দুই দিন থেকে ঠান্ডা বাতাসে খুব শীত লাগছে।
আবহাওয়া কর্মকর্তারা আরো জানান,শহর হতে গ্রামাঞ্চলে ফাঁকা মাঠ বেশি এবং গাছপালা বেশি থাকায় গ্রাম অঞ্চলে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে।এই শীতে বেশী কষ্ট পাচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। আর এই শীতে ঠান্ডাজনিত রোগ দেখা দেওয়ায় হাসপাতাল গুলোতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ফসলের বীজ তলা ঠিকমত পরিচর্যা করতে না পারা ও কুয়াশায় চারা নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রাজশাহী পবা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, সড়কে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করার চেষ্টা করছেন স্থানীয় লোকজন। সেখানে হযরত আলী নামের একজন বলেন, ‘কনকনে শীতে লোকজন জবুথবু হয়ে পড়েছে। এ জন্য ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে আমরা দু-তিনজনে সামান্য খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি।’ এই তীব্র শীতে গরু-ছাগল রক্ষা করতে চট গায়ে দিয়ে রাখতে হচ্ছে।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম জানান, দুই দিন ধরে রাজশাহীর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এ ছাড়া বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি। দিনের বেলায় সূর্যের উত্তাপ মিলছে না। এতে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। আরও কয়েক দিন এ রকম পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।